সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার দেয়া এক বাণীতে তিনি আরো বলেন, দুর্যোগের কারণে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি প্রশমনের পাশাপাশি সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য কর্মসূচিও সরকার বাস্তবায়ন করছে।
প্রতি বছরের ন্যায় দেশব্যাপী ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২০ উদ্যাপিত হচ্ছে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সুশাসন, নিশ্চিত করবে টেকসই উন্নয়ন’। প্রতিপাদ্য যথার্থ হয়েছে মত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগ থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনের দায়দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম স্ট্যান্ডিং অডারর্স অন ডিজেস্টার প্রণয়ন করেছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বে প্রশংসিত এ দলিলটি ২০১৯ সালে হালনাগাদ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে ভূমিকম্প, বজ্রপাত, পাহাড় ধস, অগ্নিকান্ড, রাসায়নিক দুর্যোগ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনাসহ সকলের করণীয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব প্রস্তুতি নিশ্চিত করার কারণে আজ প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি নূন্যতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছানোর লক্ষ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য সম্প্রতি ২৬,৩৩১টি সেতু-কালভার্ট এবং ৫৭৮৫ কিলোমিটার হেরিংবোন বন্ড রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ৪২৩ টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৬৪ জেলায় ৬৬টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন এবং ৫৫০টি মুজিব কিল্ল নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বর্তমান সরকার বিশেষ কর্মসূচি চালু করেছে। এজন্য এরই মাঝে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে সব স্তরের মানুষকে বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, কর্মহীন হয়ে পড়া স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য গত পাঁচ মাস যাবৎ খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা চালু রয়েছে। এ সকল জনবান্ধব কর্মসূচির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় সরকার সচেষ্ট আছে বলে জানান তিনি।